নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা

প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার বছর ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম ও নিম গাছের পাতা, এছাড়াও নিম গাছের ছাল ও শিকড় দিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হয়। তাই আজ এই পোস্ট টা সাজানো হয়েছে নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা নিয়ে ।

নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা


নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা


নিম পাতা উপকার বলে শেষ করা যাবে না।তবে নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে শরীরে উপকার হয়। 

তাজা নিম পাতা পরিষ্কার  পানিতে দিয়ে পাঁচ মিনিট ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন এরপর নিম নিম গন্ধ আসলে ও পানি হলুদ হলে।এটা নামিয়ে নিন এরপর  নিমপাতা ফেলে দিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে মিশিয়ে গোসলের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতাতে আাছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ফাঙ্গাল।নিমের পাতা থেকে কান্ড পর্যন্ত ১৪০ উপকারী উপাদান সন্ধান পাওয়া যায়  যেগুলি জীবনে নাশক হিসেবে কাজ করে যেমন


  • ত্বকের নানা সমস্যা দূর করে।কেননা ত্বকের কোন জীবাণু আক্রমণ হলে নিম পাতা ফোটানো পানি দিয়ে গোসল করলে কয়েকদিনের ভিতরে  সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।


  • চিকেন পক্স হলে নিম পাতা ফুটানো পানি দিয়ে গোসল করতে হবে কয়েকদিন। এতে চিকেন পক্স আস্তে আস্তে নিরময় হবে। 


  • এছাড়া ঘা ও সিরোসিস  হলে নিম পাতা গুরুত্ব অনেক। এই রোগ হলে নিম পাতা ফোটানো পানি দিয়ে গোসল করলে  অনেক উপকার হয়।


  • নিম পাতা ভিজানো পানিতে গোসল করলে ব্রণ ও ব্লাড হেট এর সমস্যা কমিয়ে দেয়। 


  • এছাড়াও কোথাও ক্ষত বা আঘাত লেগে কেটে গেলে নিমপাতার  ভেজানো পানি লাগালে বা নিমপাতা ভেজানো পানি দিয়ে  গোসল করলে  তা ঠিক হয়ে যায়।


  • প্রতিদিন নিয়ম করে নিম পাতা ভেজানো পানি দিয়ে গোসল করলে গায়ের দুর্গন্ধ দূর হয়। কেননা এতে গায়ের ব্যাকটেরিয়া মেরে দিয়ে খুব সহজে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।


  • খুশকি দূর হয়। খুশকি দূর করতে নিম পাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত নিম পাতা ভিজানো পানি দিয়ে গোসল করলে খুশকি দূর হয়ে যায় খুব সহজে। 


  • নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে চুলের ময়লা সহ চুল মজবুত উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। 


  • ধুলো ময়লার কারনে আমরা অনেক সময় চোখে সংক্রমণ ভুগে থাকি। এই চোখের সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা পেতে নিম পাতা দিয়ে গোসল করতে হবে। এতে জীবানুনাশ সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করবে।



খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় 


যাদের উচ্চ রক্তচাপ তারা নিমপাতা খাইলে তাদের রক্ত পরিষ্কার করে। নিয়মিত নিম পাতা খাইলে রক্ত রক্ত চলাচল বৃদ্ধি  করে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। 


 নিয়মিত নিম পাতার রস খেলে শরীরে হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। 


গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত নিম পাতার রস খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা গ্যাস্ট্রিকো হজমের সমস্যা নিম পাতার রস খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় হাজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 


এছাড়াও নিয়মিত নিম পাতার রস খাইলে কোলেস্টরেলের সমস্যা দূর হয়। কেননা নিয়মিত নিম পাতার ফুটিয়ে বা  পানিতে ভিজিয়ে খাইলে শরীরের কোলেস্ট্রল কমতে থাকে। 


প্রতিদিন এক টেবিল চামচ নিম পাতার রস একটানা তিন মাস খালি পেটে খাইলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।কেননা এটা খেলে ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ ইন্সুরেন্স নেবার প্রবণতা কমে যায়।


তাছাড়াও ২৫ থেকে ৩০ ফোঁটা নিম পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেটে  খাইলে জন্ডিস রোগ  থেকে রক্ষা  পাওয়া যায়। 


প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৮ থেকে ১০ টা নিম পাতা রস করে খাইলে পেট ব্যথা ও  কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়। 


যাদের দাঁতের সমস্যা আছে, দাঁতে পোকা লাগা, দাঁত যন্ত্রণা করা,মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, মারি ফুলের যাওয়া মুখের দুর্গন্ধ  তাদের নিমমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজার পাশাপাশি নিয়মিত  নিমের পাতার রস করে খাইলে এসব সমস্যা দূর  করে দাঁতকে শক্ত ও মজবুত করে,মুখের   দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। 


তাছাড়াও যাদের হৃদপিণ্ড, যকৃত, ও ধমনী রোগ আছে তারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পাঁচটি সাথে টি নিমপাতা মিশিয়ে রস করে হায়রে এই ধরনের রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারেন। 


নিয়মিত নিম পাতার রস করে খাইলে গুঁড়ো বুড়ো কি এমডি ধ্বংস করে ও ২২ ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। 


নিম পাতার রস প্রসাবের ইনফেকশন দূর করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই যাদের প্রসাবের ইনফেকশন রয়েছে তারা নিম পাতার রস করে খাইলে অনেক উপকার পাবেন। 


যাদের পাইলসের  সমস্যা তারা নিয়মিত নিম পাতার রস করে খাইলে পাইলসের জ্বালা যন্ত্রণা ও রক্ত পড়া থেকে মুক্তি দেয়।


 এছাড়া ও নিমপাতায় থাকা এন্টিফাঙ্গাল প্রপার্টি ডাইত, চুলকানি ও একজিমা দূর করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন দুইটা করে নিম পাতার রস খাইলে এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।


নিম পাতা বেটে মুখে দিলে কি হয়

রূপচর্চার রুটিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হলো নিমপাতা।নিম পাতায় থাকা

অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় তা ত্বকের অনেকগুলো সমস্যা দূর করে।যেমন:- ব্রণ, ব্ল্যাকহেডসের মতো ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এটি সাহায্য করে। সেই সাথে  পরিষ্কার করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল। লোম কূপে লুকিয়ে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে এই উপকারী নিমপাতা।


নিম পাতা মুখে ব্যবহার করার পদ্ধতি


  • তাজা নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ ভালোভাবে ধুয়ে বেটে বা মিক্সার মেশিনে মিক্স করে নিতে পারেন এরপর এটা মুখে আলতো ভাবে লাগিয়প ২০ মিনিট রেখে পরিস্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মুখের ব্রণ,ব্রণের দাগ  দূর করতে সাহায্য করবে,এবং মুখ উজ্জ্বল করে তুলবে।  


  • নিম পাতা, কাঁচা হলুদ নিম পাতার চেয়ে কম নিয়ে বেটে দুচামচ কাঁচা দুধ  একসাথে মিক্স করে এটা মুখে আলতো ভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর ২০ মিনিট পরে মুখ পরিষ্কার ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মুখের ড্রাইনেস দূর করবে,মুখে চামড়া ওঠা বন্ধ করবে এবং আপনার মুখ  কমোল ও উজ্জ্বলতা করে তুলবে। 


  • ৫-৬ টা নিম পাতা,নিম পাতার চেয়ে কাঁচা হলুদ কম নিয়ে বেটে এক চা চামচ মধু সাথে ভালোভাবে মিক্স করতে হবে। এরপর এটা মুখে দিয়ে ২০ মিনিট পরে ঠান্ডা ও পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে  ফেলুন। এতে আপনার মুখ ময়েশ্চারাইজার হবে ও মুখের দাগ ছোপ সব দূর হবে। 


  • ৮ থেকে ১০ টা নিমপাতা ভালোভাবে বেটে মুখে লাগিয়ে নিন এরপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন এতে যাদের মুখে চুলকানি থাকে তাদের চুলকানি চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। 


  • নিমপাতা পেস্ট করে এতে পরিমাণ মতো এলোভেরা জেল দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে মুখে লাগান, এরপর ১৫ মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এটা আপনার মুখের কালো দাগ সব মেছতা দূর করে মুখে উজ্জ্বল করে তুলবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url