পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা হলে করণীয়

পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা হলে আমাদের দেশে নারির অনেক দুরচিন্তায় পড়ে যায় । অনেক মেয়েদের তো আবার প্রচুর ব্যাথা হয় । যে ব্যাথা সহ্য করা যায় যায় না । তাই আজ আলোচনা করবো পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা হলে করণীয় কি 

পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা হলে করণীয়


পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা হলে করণীয়

গরম পানির সেঁক ব্যাথা কমতে সাহায্য করে। 

গরম পানিতে আদা, রস, মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খাইলে উপকার হয়।

ল্যাভেন্ডার অয়েল বা তেল পেট ব্যাথার সময় এটি কয়েক ফোটা পেটে দিয়ে ম্যাসাজ করলে ব্যাথা কমতে সাহায্য করে।

তুলসি পাতার রস খাইলে পেট ব্যাথা কমতে সাহায্য করে।

পিরিয়ডের সময় হালকা ব্যায়াম করলে ব্যাথা কমে যায়।যেমন: হাটাহাটি,সাঁতার কাটা,সাইকেল চালানো ইত্যাদি।

পিরিয়ডের সময় বেশি বেশি পানি খাওয়া,উষ্ণ গরম পানি। ভিটামিন মিনারেল আয়রন যুক্ত খাবার খাইতে 


মাসিকের সময় পেটে ব্যাথার ঔষধ 

আইবুপ্রোফেন ৪০০ মি.গ্রা. এই  ঔষধ খাওয়ার পর প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন' নামের  কেমিক্যালকে  নষ্ট করে দিয়ে ২০-৩০ মিনিটের ভিতর ব্যথা কমিয়ে দেয়। এই ট্যাবলেট টা দিনে ৩-৪ টা খাতে পারবে,,৪ থেকে ৬ ঘন্টা পর পর খাইতে হয়। যাদের বয়স ১২ বছর ও তার বেশি তারা,,,তবে খালি পেটে খাওয়া যাবে না এই ঔষধ অবশ্যই ভরা পেটে খাইতে হবে। 


প্যারাসিটামল ৫০০-১০০০ মি.গ্রা: যাদের বয়স ১২ বছর ও তার বেশি ৪-৬ ঘন্টা পর পর খাইতে পারবে,,১-২ টা..তবে দিনে ৮ টার বেশি না।


** যাদের গ্যাস্ট্রিক-আলসার  কিডনি, লিভার,হাটের সমস্যা তাদের  এই ঔষধ খাইলে আরও সমস্যা বাড়তে পারে।এজন্য চিকিৎসক এর পরামর্শ নেওয়া উচিত।


পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার

এই সময় যেহেতু শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে,সেহেতু আয়রন যুক্ত খাবার খাইতে হবে। যেমন: গরুর মাংস, কলিজা,কলা,তরমুজ,পেয়ারা,আমলকি, পালন শাক,কচু শাক। 

পিরিয়ডের ব্যাথা থেকে রক্ষা পেতে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম যুক্ত খাবার খাইতে হয়।যেমন: কলা,খেজুর,বাদাম,সামুদ্রিক মাছ। 

ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার যেমন: দুধ,দই

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন: ডাল,ডিম,মাছ,মাংস ইত্যাদি এইগুলো খাওয়া উচিত।


পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা হয় কেন

মেয়েদের মাসিক বা ঋতুস্রাব প্রতি মাসে একটা নিধারিত সময় হয়,,এই ব্যথা ৯০% মেয়েদের হয়ে থাকে,,কারণ  পিরিয়ডের ব্যথা হয় জরায়ুতে সংকোচনের কারণে, পিরিয়ড শুরু হওয়ার ঠিক আগে দিয়ে। তলপেটে ব্যথা হওয়া তাই খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কারো কারো ক্ষেত্রে এই ব্যথা খুব তীব্র হতে পারে। এর পেছনের কারণগুলো চলুন জেনে আসি।

এন্ডোমেট্রিওসিস একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা যেখানে জরায়ুর কোষগুলো জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়। এর সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হলো কোমর ও তলপেটে ব্যথা করে, যাকে বলে (পেলভিক পেইন)। এর সাথে হতে পারে মাসিকের সময় পেট ভারী ভারী লাগে, সাত দিনের বেশি সময় ধরে পিরিয়ড থাকে, দুটো মাসিকের মাঝামাঝি সময় রক্তপাত হয়, পেটে ব্যথা হওয়া, সহবাসের সময় ব্যথা অনুভব করা বা ব্যথা হওয়া, এবং গর্ভধারণে সমস্যা দেখা দেয়।

মাসিকে সময় জরায়ুর সংকোচন হয় প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক হরমোনের মাধ্যমে। যাদের শরীরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের মাত্রা বেশি তাদের তলপেটে তীব্র ব্যথা হয়।

মাসিক এর সময় যে ব্যথা হয় এবং যে ফোলাভাব হয় তাতে যে সকল বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তার মধ্যে একটি হলো প্রোস্টাগ্ল্যানডিনস বলে। সূত্র: ডা. ভিনসেন্ট।

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) নামক হরমোনজনিত ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।তবে প্রতি নারীদের ১০ জনের মধ্যে ১ জন।

জরায়ুর ভিতরের মায়োমেট্রিয়াম নামক জায়গায় থাকে।যেখানে বীজের মতো ছোটো থেকে শুরু করে বড় ধরনের ফাইব্রয়েড তৈরি হতে পারে।

পিআইডি হলো নারীর প্রজনন অঙ্গে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ। এটি সাধারণত যৌনমিলনে সংক্রমিত রোগ, যেমন ক্ল্যামাইডিয়া বা গনোরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়।

যোনেপথ অর্থাৎ( সারভাইকাল স্টেনোসিস)। এতে আপনার সার্ভিক্স বা যোনিপথ সরু বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকে।

অ্যাডেনোমায়োসিসে জরায়ু ফুলে ওঠে। এই ক্ষেত্রে সবসময় লক্ষণ দেখা যায় না।

IUD(Intrauterine Device) এটি  হলো একটি ছোটো জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি (Birth control methods)যা আপনাদের জরায়ুতে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের IUD পাওয়া যায়, এদের কোনো কোনোটিতে হরমোন থাকে আবার কিছু থাকে হরমোন থাকে না।

নারীদের ক্ষেত্রে “মাসিকের সাথে ব্যথা হবেই, তীব্র হলেও তা সহ্য করে নিতে হবে”–এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসাটা খুব জরুরি। তাই মাসিকের সময় ব্যথা যদি অনেক বেশি হয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url